ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা যাচাইয়ের উপায়

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হওয়া ও বানানোর মূল উৎপাটন রাতারাতি করা খুবই কঠিন কাজ, তবে অসম্ভব নহে।
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হওয়া ও বানানোর মূল উৎপাটন রাতারাতি করা খুবই কঠিন কাজ, তবে অসম্ভব নহে।

দীর্ঘ ৪৬/৪৭ বছর যাবৎ পর্যায়ক্রমে সংগঠিত ভুয়া সংস্কৃতি তথা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হওয়া ও বানানোর মূল উৎপাটন রাতারাতি করা খুবই কঠিন কাজ, তবে অসম্ভব নহে। এ যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া হতে হবে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও সম্পূর্ন রাজনৈতি সম্পৃক্ততাহীন। স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য ও নির্ভুল ভোটার তালিকা যে ভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে, তেমনি ভাবে একটি স্বতন্ত্র কর্তৃপক্ষ তথা কমিশন গঠন করতে হবে। উক্ত কমিশনের প্রধান থাকবেন সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের একজন বিচারপতি। তাঁর নেতৃত্বে সেনা বাহিনীর একজন চাকুরীরত লেঃ/মেঃ জেনারেল, প্রশাসন ক্যডারের সচিব পদমর্যাদার একজন চাকুরীরত চৌকোষ কর্মকর্তা, পুলিশ ক্যডারের চাকুরীরত একজন বিচক্ষণ এডিশনাল/ডি-আইজি, এনএসঅই, ডিজিএফআইসহ সকল গোয়েন্দা সংস্থা/বিভাগের একজন করে উচ্চ পদস্থ অভিজ্ঞ কর্মকর্তা এবং দুইজন সেক্টর/সাব-সেক্টর কমান্ডার বা তাঁদের সহযোদ্ধা প্রতিনিধি।

ঢাকাতে কমিশনের একটি স্থায়ী কার্যালয়, কাঠামো ও সর্বপ্রকার আনুসাঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা থাকবে। কমিশন ইতোপূর্বকার সকল মুক্তিযোদ্ধা তালিকাসমূহ পরীক্ষা-নিরীক্ষা, যাচাই-পর্যালোচনা করে নিজেদের কর্মপদ্ধতি নিরুপন করে নেবে। বিচার বিভাগীয় একজন জেলা জজ অথবা প্রতিরক্ষা বহিনীর কর্ণেল/লেঃকঃ/সম মর্যাদার কর্মকর্তা অথবা সরকারের যুগ্ম-সচিব পদ মর্যাদার কর্মকর্তা এর নেতৃত্বে প্রত্যেক জেলায় কমিশনের স্থায়ী কার্যালয়/শাখা থাকবে। উক্ত শাখায় সংশ্লিষ্ট এলাকার যুদ্ধ কালীন সেক্টর/সাব-সেক্টর কমান্ডার বা তাঁর সহযোদ্ধা প্রতিনিধি, একজন করে সেনা/নৌ/ বিমান বাহিনীর লেঃকর্ণেল/মেজর পদমর্যাদার কর্মকর্তা, তাৎক্ষণিকভাবে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার জন্য বিচারিক ক্ষমতা সম্পন্ন উপযুক্ত কর্মকর্তা, (যিনি যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হওয়ার সাথে সাথে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বিচার করে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা দাবীদারকে সাঁজা দিয়ে সরাসরি কারাগারে প্রেরণ করবেন) প্রশাসন ক্যাডারের সিনিয়র স্কেলভূক্ত একজন কর্মকর্তা, পুলিশ সুপার/অতিঃ সুপার পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা, সকল গোয়েন্দা সংস্থা/বিভাগের সিনিয়র স্কেলভূক্ত মর্যাদার একজন করে কর্মকর্তা, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পদ মর্যাদার একজন কর্মকর্তা, নিরীক্ষা ও হিসাব ক্যাডারের সিনিয়র স্কেলভূক্ত এক জন কর্মকর্তা।

সরেজমিনে উপ জেলায় যাচাই-বাছাই কালে সংশ্লিষ্ট উপজেলার যুদ্ধকালীন কমান্ডার/ডেপুটি/সহকারী কমান্ডার, স্থানীয়ভাবে সর্বজন স্বীকৃত দুই জন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয়ে যাচাই-বাছাই কিমিটি পূর্ব ঘোষণা দিয়ে প্রত্যেক উপজেলায় স্থানীয় যে কোন হল বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রকাশ্যে সর্বসম্মুখে সংশ্লিষ্ট মুক্তিযোদ্ধাকে/দাবীদারকে মাইকের সম্মুখে দাড়িয়ে নিজের প্রশিক্ষণসহ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ সংক্রান্ত যুদ্ধকালীন ঘটনা/বিবরণ/ইতিহাস বিবৃত করবেন এবং বাছাই কমিটি ও উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধা/জনতার প্রশ্নের জবাব দিয়ে নিজের দাবী প্রমান করবেন। তার আগে তাঁকে মুক্তিযোদ্ধা’র সংঙ্গা অবহিত করে, তিনি এই সংঙ্গা মোতাবেক মুক্তিযোদ্ধার আওতায় পড়েন কী না বা দাবী করেন কী না সে মর্মে অীঙ্গকারনামা দিতে সম্মত থাকলে তিনি প্রমানের আওতায় আসবেন, অন্যথায় নিজ দাবী প্রত্যাহার করে বাছাইয়ের আওতা থেকে মুক্ত হলে তঁকে অব্যহতি দেয়া যেতে পারে। তবে, নিজেকে প্রত্যাহার না করে যাচাই-বাছাইয়ের প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে প্রমানিত না হলে সংগে সংগে ভ্রাম্যমান আদালত কর্তৃক বিচার করে সরাসরি সাঁজা দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করার ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং ভুয়াগণ কর্তৃক ইতোমধ্যে যে সকল আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছে তা আইন প্রয়োগ করে সুদসহ ময়খরচায় আদায় করতে হবে।

সর্বশেষ আপডেট: ২ মার্চ ২০১৮, ১৬:১৯
ইকবাল হোসেন ফোরকান
রাষ্ট্রীয় সম্মনীভাতা প্রাপ্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা

পাঠকের মন্তব্য

সর্বশেষ আপডেট


বিনোদন