কতিপয় কীর্তিমান মেধাবী ও কিছু না বলা কথা

কীর্তিমান মেধাবী (প্রতীকী ছবি)।Medi Belortaja
কীর্তিমান মেধাবী (প্রতীকী ছবি)।

মহান মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীতে স্বাধীন দেশের প্রশাসন গঠনের ভার তৎকালীন পাকিস্তান প্রশাসন থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত কথিত মেধাবী সাবেক সিএসপি ও পকিস্তান আমলে তথাকথিত মেধার ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত অন্যান্য আমলাদের উপর বর্তিয়ে ছিল। স্বাধীনতার ৪৬/৪৭ বছর পর আজ দেশের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নৈতিক অবস্থা দেখে তাদের মেধার প্রশংসা করার কোন অবকাশ নেই। বলা বাহুল্য, ঐ সকল মেধাবীদের অধিকাংশ ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তান সরকারের পক্ষে জীবনপাত করেছিলেন। যদিও তারা তাদের কথিত মেধা বিনিয়োগ করে পাকিস্তানকে রক্ষা করতে সক্ষম হন’নি বরং শোচনীয় ভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। এ থেকেই তো তাদের কথিত মেধার তীক্ষ্ণতার প্রমান পাওয়া গিয়েছিল। তথাপি অবোধগম্য কারণে স্বাধীনতার পর ঐ সকল ব্যর্থ তথা পরাজিত মহিরুহু প্রশাসকদের সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের প্রশাসনে বসানো হয়েছিল। তাঁরা দেশ-জাতির কতটুকু উদ্ধার করতে পেরেছেন, তা তো আমরা দেখতেই পাচ্ছি। তবে, এ কথা অনস্বীকার্য যে তারা তাদের সেই কথিত মেধা, কৌশল ও অভিজ্ঞতা খাটিয়ে ঘুষ-দূর্নীতি আজ সর্বক্ষেত্রে প্রসারিত করতে সফল হয়েছেন। জাতির নৈতিক চরিত্র আজ ধ্বংশের শেষ প্রান্তে উপনীত করতে তাদের মেধার পরিপূর্ণ সক্ষমতা দেখাতে সক্ষম হয়েছেন বৈকি। এত কিছুর পরও আমাদের দেশের এক শ্রেণীর নব্য শিক্ষিত সমাজ তথাকথিত সুশীলগন ইনিয়েবিনিয়ে বস্তাপচা সেই মেধার রব তুলে পরীক্ষিত দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান/ পোষ্যদের রাষ্ট্রের প্রশাসনিক কাঠামো থেকে দূরে রাখার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা তথা বিভিন্ন অপ-কৌশল নীরবে সন্তপর্ণে অব্যহত রেখে চলেছেন।

১৯৭১ সালেও এই কথিত মেধাবীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন’নি। তাঁরা তখন শহরেই অবস্থান করে সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছেন। তাদের কেউ কেউ তৎকানীন পাকিস্তান সরকারের চাকুরী করেছেন, নিয়মিত বেতন-ভাতাদিও আহরণ করেছেন। কেউ কেউ আবার লেখাপড়া চালিয়েছে, এমনকি পরীক্ষায় অংশগ্রহণও করেছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ অবশ্য যুদ্ধের শেষ দিকের সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করারও চেষ্টা করেছিলেন। এক্ষেত্রে গুটিকতক সফলও হয়েছিলেন তখন। অন্যদিকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশপ্রেমিক যুব সমাজ অসম যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, দেশকে হানাদার মুক্ত করে জাতিকে একটা দেশ, একটি পতাকা ও একটি মানচিত্র উপহার দিয়েছিল। তখন থেকেই সেই পরাজিত শক্তি ছলে-বলে-কৌশলে দেশের স্বাধীনতা, জাতির নৈতিকতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। এ লক্ষ্যে তারা কখনো ধর্মের নামে, কখনো বা সাম্প্রদায়িকতার নামে বিভিন্ন অজুহাত সৃষ্টি করেছেন। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক কারণে বা সামাজিক প্রতিপত্তির লোভে বা অন্য কোন হীন উদ্দেশ্যে বা সরকার কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধাদের প্রদত্ত কিছু সম্মান বা সুযোগ-সুবিধার লোভে, সর্বোপরি বিচারহীনতা তথা আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাবে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কথিত সেই মেধাবীদের সৃষ্ট অপ-কৌশল অবলম্বন করে সরকার স্বীকৃত মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অমুক্তিযোদ্ধাদের অন্তর্ভূক্ত করিয়ে আজ প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদেরকেই প্রশ্নের সম্মুখীন করা হয়েছে। অন্যদিকে, মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অমুক্তিযোদ্ধাদের অন্তর্ভুক্তির কারণ দেখিয়ে মুক্তিযোদ্ধা পোষ্যদের চাকুরীর কোটা বাতিল বা সংকুচিত করার পায়তারা করছে।

প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য যে, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ভারতের অভ্যন্তরে নিরাপদ স্থানে থেকে মুজিব নগর সরকারে যোগ দিয়েছিলেন ড. সা’দত হুসাইন। সেই সুবাদে ঝুঁকিপূর্ণ রনাঙ্গণে কখনওই না এসে নিরাপদে অবস্থানকারী একজন কৌশলগত মুক্তিযোদ্ধা তিনি। সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান থাকা কালে ড. সা’দত হুসাইনের বিরুদ্ধে ১৩টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তুলে তাঁকেই চিঠি দিয়েছিলেন কমিশনের তৎকালীন একজন সদস্য। ‘বাংলাদেশ কর্মকমিশনে স্থবিরতা’ শিরোনামে লেখা কমিশনের সদস্য এ টি আহমেদুল হক চৌধুরীর সেই চিঠির অনুলিপি তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও দেওয়া হয়েছিল। চিঠিতে তখন বলা হয়েছিল, পিএসসির প্রধান কাজ রাষ্ট্রের জন্য যোগ্য কর্মকর্তা নির্বাচন করা। কিন্তু পিএসসির সেই কাজটি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। প্রজাতন্ত্রের চাকরিপ্রার্থী নির্বাচন সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। সেই চিঠিতে ড. সা’দত হুসাইনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলা হয়েছিল, ‘…আপনার দ্বিমুখী নীতির কারণে শত শত মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তার চাকরি ও সামাজিক জীবন তছনছ হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে পিএসসিতে আপনার নেতৃত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। এই সাংবিধানিক পদটির মর্যাদা রক্ষার্থে আপনি নিজেই যথোপযুক্ত পদক্ষেপ নেবেন বলে আশা করছি।’

এই ড. সা’দতই তখন বাহ্যিক ভাবে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও তাদের পোষ্যদের প্রাপ্য ৩০% কোটা না কমিয়ে শুভঙ্করের ফাঁকির মত কোটা প্রবর্তন করেছিলেন। প্রকৃতপক্ষে, মোট শূণ্য পদের মাত্র ১০% এরও কম পদে মুক্তিযোদ্ধার পোষ্য সন্তান/নাতীদের নিয়োগ করার অপকৌশল চালু করেছিলেন তিনি। সম্মিলিত উন্মুক্ত মেধা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধা পোষ্যদের কোটার সুযোগ পাওয়ার বিধান করা হয়। উপরন্তু, পিএসসি’র দৃষ্টিতে উপযুক্ত মুক্তিযোদ্ধা পোষ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে সেই সকল পদও তথাকথিত মেধা তালিকা থেকে পূরণ করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। মূলতঃ এই সকল দুষ্টু জ্ঞানপাপীরাই মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী প্রশাসনে বঙ্গবন্ধুর উদারতার সুযোগে অনুপ্রবেশ করে দেশের প্রশাসনিক অবস্থা আজ এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে।

সারা পৃথিবীতে দেখা যায়, মেধাবীরা সাধারণত শিক্ষকতা পেশায় বা গবেষণাধর্মী পেশায় যোগদান করে। পদ্ধতিগত কারণেই প্রশাসনিক কার্যে সাধারণত অতি মেধা’র প্রয়োজন হয়না। এখানে মূখ্য যোগ্যতার মানদণ্ড হল সততা, দেশপ্রেম ও দেশের প্রতি সর্বোচ্চ আনুগত্য। যা, আমাদের দেশের প্রশাসনে নিয়োজিত তথাকথিত মেধাবীদের আদৌ আছে কী না সে সম্পর্কে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ রয়েছে বৈকি। যেমন সম্প্রতি, শিক্ষা সচিব নির্বোধদের মত নিঃসঙ্কোচে বলেছেন যে,“প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়াটা খুবই সাভাবিক।” নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা সচিব মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগ প্রাপ্ত হন’নি, বরং মেধা কোটায় নিয়োগ পেয়েছিলেন। এ থেকেই এদেশের মেধার দৌড় কতখানি তা সহজেই অনুমিত হয়।

এছাড়াও আমাদের দেশে কিছু “চর্বিদার” অবসরপ্রাপ্ত আমলা রয়েছেন। যারা অবসর জীবনে ফরমাইশী জ্ঞান-বুদ্ধি বিতরণ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। তাঁরাই সমাজে আজ বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিগণিত হন। বিশেষকরে সরকারী চাকুরীরত অবস্থায় জীবনে কোন দিন জনগণের পক্ষে একটা কথা বলেন নাই। উপরন্তু চাকুরী সুবাদে প্রাপ্ত ক্ষমতা বল্গাহীন অপব্যবহার করেছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ইতিহাসের ছাত্র হয়েও সরকারী খরচে অর্থনীতিতে পিএইচডি তকমা হাসিল করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সর্ব্বোচ্চ পদ তথা দীর্ঘ দিন, দফায় দফায় অর্থ সচিব পদের শোভাবর্ধন করেছেন। শুধু স্বদেশে নয় বিদেশেও মেধা ‘খয়রাত’ দিতে দিতে বিশ্বকে ‘উদ্ধার’ করেছেন। আজ তাঁরাই স্বঘোষিত জাতির বিবেক সেজেছেন। এরাই চাকুরী জীবনে প্রাপ্যতা নির্বিশেষে সর্ব্বোচ্চ সুযোগ সুবিধাদি হাসিল করেছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই অবসর গ্রহনের পরও বিভিন্ন অপকৌশলে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মাধ্যমে যারপরনাই সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার পর আমরন ফরমাইশী জ্ঞান ও বুদ্ধি বিতরণের মাধ্যমে জাতিকে নছিয়ত করে যাচ্ছেন। তবে, চাকুরী জীবনে এই সকল দেউলিয়া জ্ঞাণী তথাকথিত মেধাবী দ্বিপদী প্রাণীরা জাতিকে কী কী ভাবে উদ্ধার করেছেন জাতির সামনে তার কোন খতিয়ান নেই। নিজের জীবনকে নিরাপদ রাখতে মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে তাঁদের কেউ কেউ দেশত্যাগ করেছিলেন বটে। সেখানেও সোনা-রূপার চামুচ তাদের মুখেই ছিল। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ভারতের অভ্যন্তরে নিরাপদ স্থানে থেকে মুজিব নগর সরকারে যোগ দেয়ার সুবাদে যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে সর্বাগ্রে তাঁরা মুক্তিযুদ্ধের সকল সুযোগ-সুবিধা লুটে নিতে সক্ষম হয়েছিলেন। দুই বছরের ভূতাপেক্ষ জেষ্ঠতা, যদিচ্ছা পদোন্নতি নেয়ার নব নব কৌশল আবিস্কার করে দ্রুততম পদোন্নতি হাসিল, অগ্রীম ইক্রিমেন্ট থেকে শুরু করে হেন সুযোগ-সুবিধা নেই যা তাঁরা গ্রহণ তথা ভোগ করেনি। তাদেরই একজন ড. আকবর আলী খান সিএসপি।

সাম্প্রতিক সময়ে ড. আকবর আলী খান বাংলাদেশ থেকে নিয়োগে কোটা ব্যবস্থা তুলে দেওয়া উচিত বলে একাধিক বার মন্তব্য করেছেন। ড. সা’দত হুসাইন ও ড. আকবর আলী খানের মত কথিত মেধাবীরাই আজ স্বাধীনতা বিরোধীদের ফরমাইশে অতি সুক্ষভাবে মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মকে প্রশাসন থেকে সরানোর জন্য ইনিয়ে বিনিয়ে কোটা বাতিলের পক্ষে ক্রমান্বয়ে জনমত সৃষ্টির ক্ষেত্র তৈরীর ঠিকাদারী নিয়ে মাঠে নেমেছেন। গত ২০ জানুয়ারি শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘দ্য প্রেজেন্ট সিভিল সার্ভিস সিস্টেম ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে ড. আকবর আলী খান বলেছেন, “বাংলাদেশ থেকে এ মুহূর্তে নিয়োগে কোটা ব্যবস্থা তুলে দেওয়া উচিত। কোটার কারণে দেশের মেধাবীরা আজ বিপন্ন। বাংলাদেশের ক্যাডার নিয়োগে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে কোটা সিস্টেম, ফলে অনেক মেধাবীরা চাকরি পাচ্ছে না। কোটা বন্ধ হলে অনেক মেধাবীরাই চাকরি পাবে”। বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ পদ্ধতিতে অসঙ্গতি রয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোটা সিস্টেম চালু হয়েছিল, কারণ তাদের অবস্থা তখন খারাপ ছিল। এখন মুক্তিযোদ্ধার নামে যে কোটা দেওয়া হয় তা নিতান্তই অমূলক”।

এদিকে ২৭ থেকে ৩০তম বিসিএসের রিপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২৭তম থেকে ৩০তম বিসিএসের মুক্তিযোদ্ধা পোষ্য কোটা পূরণ হয়েছে গড়ে ১২ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। ১৯৮২ সালে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পূরণ হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ১৯৮৩ সালে ১৩ শতাংশ, ১৯৮৪ সালে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ১৯৮৫ সালে ৫ শতাংশ, ১৯৮৬ সালে ১ শতাংশ, ১৯৮৭ সালে ১ শতাংশের সামান্য বেশি, ১৯৮৮ সালে শূন্য শতাংশ, ১৯৮৯ সালে ১ শতাংশের কিছু বেশি এবং ১৯৯০ সালে ১ শতাংশ। অর্থাৎ মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা থাকলেও সেটা কোটা পূরণ হয়নি কোনো বছরই। বর্তমানে, ৬৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ চাকরি মেধার ভিত্তিতেই হচ্ছে।

ড. আকবর আলীদের জেনে রাখা উচিৎ যে, মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থা কখনোই খারাপ ছিল না, বরং তাঁরা জাতিকে একটা দেশ উপহার দিয়েছে। তবে হ্যাঁ, আর্থিকভাবে মুক্তিযোদ্ধারা ড. আকবর আলী খানদের মত নিজ স্বার্থ হাসিলে পারঙ্গম এবং নিজ সচ্ছলতা অর্জনে পটু ছিলেন না। কেবল আর্থিক সহায়তার জন্য চাকুরীর ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটা প্রবর্তন করা হয়’নি। বরং প্রশাসনে পরীক্ষিত দেশপ্রেমিক, সৎ, নিবেদিত ও নিষ্ঠাবানদের নিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির জন্যই মুক্তিযোদ্ধা কোটা চালু করা হয়েছিল। এছাড়াও তাদের দাবী অনুযায়ী কোটা বাতিল করা হলে তা সংবিধানের ২৯(৩) ‘ক’ ধারার বরখেলাপ হবে। কাজেই, দেশপ্রেমিক, সৎ, নিবেদিত প্রশাসন গড়ার লক্ষে প্রশাসনে অধিক হারে মুক্তিযোদ্ধা পোষ্যদের নিয়োগ প্রদান করে প্রশাসন যন্ত্রকে আরও দেশপ্রেমিক, সৎ ও জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা আজ সময়ের দাবী। তাই, মুক্তিযোদ্ধা কোটার আবেদনকারীগণ লিখিত পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হলেই তাদেরকে সরাসরি নিয়োগ প্রদান করতে হবে। এক্ষেত্রে ভুলে গেলে চলবে না যে, অভিজ্ঞতা কাজ করতে করতে এমনিতেই হয়ে যায়। অপরদিকে তথাকথিত অতি মেধাবীদের প্রশাসনে নিয়োগ না দিয়ে শুধুমাত্র শিক্ষকতা ও গবেষণামূলক কাজে নিয়োগ প্রদান করা যেতে পারে। জাতি দেখুক কথিত মেধাবীরা সেখানে কী কী ‘উদ্ধার’ করতে সক্ষম হয়।

তাছাড়া, কোট সংস্কার চেয়ে সম্প্রতি হাইকোর্টে রীট মামলা দায়ের কর হয়েছিল। যা শুনানীঅন্তে খারিজ হয়ে গেছে। কাজেই হাইকোর্টে নিষ্পত্তিকৃত কোন বিষয়ে বিরুপ মনোভাব প্রকাশ বা বিরোধিতা করা আদালত অবমাননাকর।

সর্বশেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৮, ০১:২০
ইকবাল হোসেন ফোরকান
রাষ্ট্রীয় সম্মনীভাতা প্রাপ্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা

পাঠকের মন্তব্য

সর্বশেষ আপডেট


বিনোদন