এক স্বপ্নবাজ মানুষ আলমগীর কবির

মানুষের বিপদে ছুটে যাওয়া, অন্যর সমস্যকে নিজের কাধেঁ নিয়ে তা সমাধান করা, এই সব মানুষদের হয়ত আমরা বলি “ভাল মানুষ”।আর এই ভাল মানুষরা আছে বলেই হয়ত আমাদের সমাজের মানুষরা স্বপ্ন দেখে একটি নতুন দিনের। তেমনি আজ এমন একজন স্বপ্নবাজ মানুষের কথা বলব”সেই স্বপ্নবাজ পরোপকারী মানুষটির নাম আলমগীর কবির।

জন্ম নওগাঁ জেলার ধামইরহাট থানার আগ্রাধিগুন ইউনিয়নে। বাবা মৃত মজিবর রহমান মাতা জাহানারা বেগম, পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে তিনি চুতুর্থ, পডালেখে শেষ করেছেন ঢাকা কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কাজ করছেন পরিবেশ বাদী সংগঠন গ্রীন ভয়েস নিয়ে। গ্রীন ভয়েস নিয়ে আলমগীর কবির বলেন, আমি ছাত্র জীবনে ছাত্র ইউনিয়নের সাথে যুক্ত ছিলাম পরবর্তীতে কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দি। আমাদের দেশের ছেলে মেয়েরা রাজনীতিতে জড়াতে চায়না, কিন্তু ঐ সব ছাত্র ছাত্রীরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে অন্যয় এর প্রতিবাদ করে, এসব ছাত্র ছাত্রীদের একটা প্লাটফর্মে নিয়ে আসার চিন্তা থেকে আমার গ্রীন ভয়েস এর যাত্রা। স্কুল কলেজের ছেলে মেয়েদের পরিবেশ সচেতন, পরিবেশ বিপর্যয় এবং রাজনৈতিক ভাবে সচেতন করাই গ্রীন ভয়েস এর লক্ষ্য। স্কুল কলেজ গুলোতে পরিবেশ ক্লাব, গ্রীন ক্লাব সৃষ্টি করে আমরা পরিবেশ নিয়ে রচনা প্রতিযোগীতা ও কুইজ প্রতিযোগীতার আয়োজন করি যাতে পরিবেশ এর উপকারীতা সম্পর্কে জানতে পারে। আমাদের চারপাশের খাল,খেলার,,নদী দখল প্রতি মুহূর্তে হচ্ছে। এগুলো যাতে দখল না হয় তার জন্য আমরা জন সচেতনতা মূলক কাজ করে থাকি।

গ্রীন ভয়েস এখন পর্যন্ত অনেক গুলো আন্দোলনের সাথে সরাসরি জডিত ছিল বুডিগঙ্গা দখল মুক্ত করন, ঢাকা শহরের খেলার মাঠ রক্ষা, রামপাল বিরোধী আন্দোলন, ফুলবাডী আন্দোলন সহ বেশ কিছু আন্দোলন এর সাথে যুক্ত ছিল।গ্রীন ভয়েস সারা বাংলাদেশের স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রীদের পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে চায়।যার সুফল পাবে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী।

এছাডা এই দক্ষ সংগঠক বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমের সাথে যুক্ত আছেন, কিছু সময় কাজ করেছেন কৃষক আন্দোলন নিয়ে, ঘুরেছেন গ্রামে গ্রামে কৃষকদের বাড়িতে বাড়িতে।

আলমগীর কবির বলেন, মানুষ হিসাবে আমি এটা মনে করি, বিপদগ্রস্থ মানুষের পাশে দাডানো আমাদের প্রত্যেক মানুষের দায়িত্ব। সংগঠিত না হলে মনের জাগরন না ঘটালে সমষ্টির কল্যানের কথা না ভাবলে একক উন্নতি দিয়ে দেশের পরিবর্তন করা যাবে না।

নিজ এলাকায় গরীব, মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য অর্থিক সহায়তা চালু রেখেছেন। পিতা মজিবর রহমান স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে ১৭ বছর ধরে চেয়ারম্যান ছিলেন। পিতার স্মৃতি রক্ষার্থে বাবার নামে প্রতিষ্টা করেন”মজিবর রহমান মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন” এই ফাউন্ডেশন থেকে চালু করেছেন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক লেভেলে উপবৃত্তি, একজন সংস্কৃতিমনা মানুষ হিসাবে সংস্কৃতিক আয়োজন, খেলাধুলা,ক্রীডা প্রতিযোগীতা,শিক্ষাবৃত্তি, এলমানাই এসোসিয়েশন গঠন করে ধামইরহাট উপজেলা কে জাগিয়ে তুলেছেন। তিনি মনে করেন মনজগতের নবজাগরন ঘটাতে হলে সংস্কৃতি চর্চা ও খেলাধুলার কোন বিকল্প নেই।

জাতীয় ত্রান কমিটি, ঘুডি ফেডারেশন, তাজউদ্দিন আহম্মদ পাঠচক্র, তেল গ্যাস আন্দোলন, ভোক্তা অভিযোগ নিষ্পত্তি জাতীয় কমিটি ক্যাব, খেলাঘর সহ অনেক গুলো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সংগঠনিক পরিসরে কাজ করার মাধ্যমে মনযোগী হয়েছেন গ্রীন ভয়েস কে বাংলাদেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ছডিয়ে দিতে।

তিনি বলেন মানুষের অনেক স্বপ্ন থাকে, আমার স্বপ্ন একটু ভিন্ন। চারপাশের মানুষের অপ্রাপ্তি গুলো যদি ঘুছাতে পারতাম, মানুষের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিবেশ, বাসস্থান, সহ যাবতীয় মৌলিক বিষয় গুলো যদি নূন্যতম মেটানো যেত তবে তৃপ্তি পেতাম। দেশের যে প্রান্তে অধিকার আদায়ের আন্দোলন, যেখানেই বিপদগ্রস্থ মানুষ, সেখানেই নিজের সামর্থ নিয়ে হওয়া আমার লক্ষ্য। আমি স্বপ্ন দেখি, একদিন দেশের মানুষের মৌলিক চাহিদা গুলো পরিপূর্ন ভাবে পূরন হবে মানুষ মানুষের জন্য কাজ করবে এটাই আমার বিশ্বাস।

ছাত্রজীবনে আলমগীর কবির বামধারার ছাত্র সংগঠন বাংলালাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারন সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন,পরবর্তীতে যুক্ত হন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টিতে।
বর্তমানে তিনি একটি বিদেশী প্রতিষ্ঠনে কর্মকর্তা হিসাবে কাজ করছেন।ব্যাক্তি জীবনে তিনি বিবাহিত, দুই সন্তান সহধর্মীনি লায়লা আরজু সামাজিক সংগঠন খেলাঘরের সাথে যুক্ত আছেন।

সর্বশেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১৮, ০৯:৩৩
ফয়সাল উদ্দীন নিরব
নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মন্তব্য

সর্বশেষ আপডেট


বিনোদন