মতিরহাট টু ঢাকা, যেভাবে পৌঁছে মেঘনার তাজা ইলিশ

ইলিশ সম্পদ। যেটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি মিলেছে “বাংলাদেশী ব্র্যান্ড” হিসেবে। সেক্ষেত্রে কতটা ভূমিকা রাখছে ইলিশ ঘাটগুলো? সেখানেই কিভাবে গড়ে ওঠেছে মানুষের কর্মসংস্থান? ১৮সেপ্টেম্বর, সোমবার রাত ৯টা। দেশের চারটি ইলিশ ঘাটের শীর্ষস্থান দখলকারী মতিরহাট ইলিশ ঘাট। ইলিশ বেচা-কেনা চলছে ধুম গতিতে। ইলিশ ঘাটজুড়ে আড়ৎদারদের নিলামে বেচা- কেনার উচ্চ শব্দও থেমে নেই। আড়ৎএর হিসাব রক্ষকদেরও নেই

একটু অবসরতা। কলমের কালিতে অবিরাম লিখে যাচ্ছেন ইলিশ বিক্রির হিসাব। কারো জালে ধরা পড়ছে বিশাল আকৃতির ইলিশ, কারো জালে খানিকটা ছোট। কেউ পাইকারী ক্রেতা, কেউ খুচরা ক্রেতা, কেউবা বিশিষ্ট ক্রেতা! উপকূলের ভয়াল নদী মেঘনা। জীবন- মৃত্যুর সর্বোচ্চ ঝুঁকি জেলেদের ছুটে চলা গন্তব্য মেঘনার মধ্যস্থান। যেখানে গেলে জালে মিলে টাটকা ঝঁকঝঁকের রূপালী তাজা ইলিশ। মাত্র দুই থেকে আড়াই ঘন্টা সময়ের ব্যবধানে মেঘনার গভীর থেকে ইলিশ ধরে কূলে ফিরে ওরা। ইলিশ এনে আড়তের বাক্সায় রাখেন। নিজেদের স্বাধীনতা নেই, সময় মোতাবেক ক্রেতার সমাগম বুঝে ইলিশ বিক্রি করা আড়ৎদারের স্বাধীনতাই মুর্খ্য। যা হোক নিলামে যখন ইলিশ বেচা- কেনা চলে, তখন খুব কম ঠাঁই মিলে সাধারণ ক্রেতাদের। পাইকারী অথবা বিশিষ্ট ইলিশ ব্যবসায়ীদের দখলে থাকে পুরো ইলিশ ঘাট। ঢাকার কারওয়ান বাজারে ইলিশ ব্যবসার সাথে জড়িত মোঃ সুমন।

বয়সে ৩০এর কাছাকাছি। ইলিশের ব্যবসার জন্য বেচে নিয়ে মতিরহাট ইলিশ ঘাটকে। এখানে থেকেই তিনি ইলিশ ক্রয় করেন এবং তা ঢাকা থেকে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে ইলিশ রপ্তানি করেন। ইলিশ ঘাটে কথা হয় তার সাথে। জানতে চাইলে তিনি একুশ শতককে বলেন, “আমার বাড়ি নোয়াখালী। মতিরহাট থেকে ইলিশ ক্রয় করে কারওয়ান বাজারে ব্যবসা করি। আজ ৫ লাখ টাকার ইলিশ ক্রয় করেছি। যেখানে ইলিশের নিরাপত্তার জন্য ককসিট, বরফ, প্লাষ্টিকের বস্তা ও আরো কিছু জিনিসপত্র ব্যবহার করেছি। স্থানীয় মতিরহাট বাজারের বরফ কারখানা থেকেই বরফ কিনেছি।

বরফের মাঝে বস্তাবন্দি ইলিশ ট্রাকে করে রাতেই ঢাকায় নিয়ে যাবো।” ইলিশ ঘাটের আড়তের হিসাব রক্ষক মোঃ খোকন একুশ শতককে বলছিলেন, “তিনটি বরফ কারখানা থেকে উৎপাদনকৃত বরফ দিয়ে ব্যবসায়ীদের ক্রয় করা ইলিশ ঝুঁকিহীনভাবে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে বরফ
কারখানা ও ইলিশ ঘাটে বহু মানুষের কর্মসংস্থান প্রসার হয়েছে।”

একুশ শতকের সাথে বিশেষ আলাপকালে মতিরহাট ইলিশ ঘাটের সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মেহেদী হাসান লিটন বলেন, “আমাদের ইলিশ ঘাট বৃহত্তর নোয়াখালীর সবচেয়ে বড় ইলিশ ঘাট। যেখানে প্রতিনিয়ত বহু মানুষের জীবিকা নির্বাহ চলছে। জেলেরা পাচ্ছে ইলিশের প্রকৃত মূল্য আর ক্রেতারাও খুব সহজে নিলামের মাধ্যমে কিনছেন ইলিশ। এটি দেশের একটি সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক অঞ্চল। এমন সম্ভাবনাময় জনপদকে সরকারের অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা জোর দাবি জানাচ্ছি।”

সর্বশেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১০:৫৩
জুনাইদ আল হাবিব
কমলনগর প্রতিনিধি

পাঠকের মন্তব্য

সর্বশেষ আপডেট


বিনোদন