ইশতেহার প্রকাশ করলেন গনফ্রন্ট মেয়রপ্রার্থী সুজন

ইশতেহার প্রকাশ করলেন গনফ্রন্ট মেয়রপ্রার্থী সুজন।
ইশতেহার প্রকাশ করলেন গনফ্রন্ট মেয়রপ্রার্থী সুজন।

সংবাদ সম্মেলনে ইশতেহার প্রকাশ করলেন গনফ্রন্ট মনোনীত ঢাকা দক্ষিনের মেয়র প্রার্থী আব্দুস সামাদ সুজন। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকাল ৪ টায় তোপখানা রোডস্থ পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তিনি ২১ দফা নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে আব্দুস সামাদ সুজন বলেন, ‘সমতাভিত্তিক, নিরাপদ যানজটমুক্ত মাদকমুক্ত ঢাকা গড়ে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেন, এজন্য চাই সঠিক উন্নয়ন পরিকল্পনা, আমার নেতৃত্বে গণমানুষের প্রতিনিধি নিয়ে নীতিনিষ্ঠ রাজনীতিবিদ দিয়ে কমিটি করা হবে।’

সামাদ বলেন, রাজধানী ঢাকা দেশের প্রাণকেন্দ্র। দেশের রাজনীতি ও অর্থনীতির পরিচালনার কেন্দ্র। ঢাকা সিটি কর্পোরেশন কে দুর্নীতির আখড়া করা হয়েছে। এখন ঢাকার কথা বললেই মানুষের কল্পনায় ভাসে অবাসযোগ্য, যানজট, ধূলা ও দূষিত বায়ু, মাত্রাতিরিক্ত শব্দ, অপরিকল্পিত স্থাপনা, চাঁদাবাজ মাদক সন্ত্রাস ধর্ষনের সুতিকাগারে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, দুই বৃহৎ গোষ্ঠীর প্রতিনিধিরাই নগরের মেয়রের দায়িত্বে ছিলেন। তাই সাধারণ গরিব-মেহনতী-মধ্যবিত্ত মানুষকে বঞ্চিত করে তারা শাসক গোষ্ঠীর নিরবিচ্ছিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের বিষয়টিকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। ঢাকায় খোলা আকাশের নীচে অসংখ্য মানুষ রাএিযাপন করে আজ ভিক্ষুকের শহরে পরিনত করা হয়েছে ঢাকাকে। মেয়রগন ক্ষমতার অপব্যবহার করে অর্থ সম্পদ তৈরি করেছে নাগরিকদের কোন খোঁজ খবর রাখেন নাই। নির্মম বাস্তবতা ডেঙ্গু মশা যানজট বায়ুদূষণ আর অবাসযোগ্য শহরে পরিনত করা হয়েছে। ১% লুটেরা বুর্জোয়া শাসক গোষ্ঠী বনাম ৯৯% শতাংশ জনগণের স্বার্থ। স্বার্থের দিকে তাকালে আমরা দেখি ১% রক্তচোষা শোষক লুটেরা গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষায় ব্যস্ত আর সমাজের ৯৯% মানুষ শোষণের যাতাকলে পিষ্ট। অথচ আমরা ভোট দেই সেই ১% কেই। এতকাল আমরা ভোট দিয়ে প্রতিদান হিসেবে পেয়েছি গ্যাস সংকট, যানজট, জলাবদ্ধতা, কালোধোঁয়া, খাদ্যে ভেজাল, উন্নয়নের নামে লুটপাট, নদী-খাল-জলা ভরাট ও দখল, ক্যাসিনো বাণিজ্য, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ হাজারো সংকট। তাই ভোট দেওয়ার পূর্বে ভাবতে হবে, কাকে আমরা মেয়র নির্বাচিত করছি? আদর্শবাদী, নিষ্ঠাবান, মেহনতি-গরিব-মধ্যবিত্তদের প্রতিনিধিকে নাকি ধনী-লুটেরা-শাসকগোষ্ঠীকে? সৎ-যোগ্য নাকি দুর্নীতিপরায়ণ-দখলদারের তাবেদার গোষ্ঠীকে? সমতা ও ন্যায্যতার ধারক নাকি শোষণকারীকে? প্রকৃত জনবান্ধব রাজনৈতিক নেতৃত্ব নাকি লুটেরা ধনিক শ্রেণির প্রতিনিধি-ব্যবসায়ীদের? মুক্তবুদ্ধি চর্চার ধারক অসাম্প্রদায়িক শক্তি নাকি সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তির প্রতিনিধিকে? বিকল্প শক্তি নাকি তথাকথিত বড় দল বলে পরিচিত চলমান বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়ার প্রতিনিধিকে? শুভ না অশুভ শক্তিকে।

তিনি বলেন, এটাই সুযোগ পরিবর্তন শুরু করার। আব্দুস সামাদ সুজন তার নির্বাচনী ইশতেহারে ঢাকা মহানগরীতে যানজট নিরসন, বায়ু দূষণ, জলাবদ্ধতা নিরসন, মশা নিধন, ঢাকা শহরকে সুবজ শহরে পরিণত, পরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ এর সমস্যা সমাধান, বিষমুক্ত খাবার ও ভেজালমুক্ত বাজার নিশ্চিত করা, বস্তিবাসী ভাসমান মানুষের সমস্যা সমাধান ও বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ, নারী ও সবার নিরাপত্তা বিধান, নগরবাসীর স্বাস্থ্য ও চিকিৎসেবা নিশ্চিত করা, হকার ও রিক্সা সমস্যা সমাধান, শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা, প্রতিবন্ধীদের সুযোগ-সুবিধা প্রদান, পর্যটন নগরীর সুযোগ-সুবিধা বিধান, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গড়ে তোলা, খেলাধুলা, সংস্কৃতি চর্চা ও বিনোদনের নিশ্চয়তা বিধান করা, দুর্নীতি দূর ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, অসাম্প্রদায়িক ঢাকা গড়ে তোলা এবং সামগ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনার জন্য নগর সরকার প্রতিষ্ঠায় দায়িত্ব পালনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। হকার বস্তিবাসী ভিক্ষুকদের পুণর্বাসন করার কথা বলেন

এ সময় উপস্থিত ছিলেন গনতান্ত্রিক বাম ঐক্যর সমন্বয়ক ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড হারুন চৌধুরী, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সামছুল হক চৌধুরী, এসডিপির আহ্বায়ক কমরেড আবুল কালাম আজাদ, কমিউনিস্ট পার্টি(মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা বিজ্ঞানী সামছুল হক সরকার প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারী ২০২০, ০৯:০৫
নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মন্তব্য

সর্বশেষ আপডেট


বিনোদন