রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘকে সম্পৃক্ত করবে বাংলাদেশ

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ৬ লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনকে সম্পৃক্ত করবে বাংলাদেশ।

আজ ঢাকায় বিদেশী কূটনীতিকদের রোহিঙ্গাসংক্রান্ত পরিস্থিতি অবহিত করার পর সাংবাদিকদের কাছে এ বক্তব্য তুলে ধরেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী।

অন্যদিকে কূটনীতিকদের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের ফেরত দেয়ার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা, ও বাসস্থানসহ মৌলিক বিষয়গুলো নিশ্চিত করার ওপর জোর দেয়া হয়।

ব্রিফিং এর পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী বলেছেন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় তারা ইউএনএইচসিআর-কে সম্পৃক্ত করতে চান।

এজন্য একটি সমঝোতা স্মারক সাক্ষর করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এটি পুরোপুরিই বাংলাদেশের পার্ট বা অংশ।

কিন্তু এতদিন মিয়ানমার আন্তর্জাতিক সংস্থাকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করতে রাজী ছিলোনা।

এমনকি পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের আলোচনা বা জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির সভা - কোথাও এ বিষয়টি এসেছে বলে শোনা যায়নি।

যদিও জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা আগেও চেয়েছে তাদের যেন প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করা হয়।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, মিয়ানমার আগে আপত্তি করেছে - কিন্তু এটি বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত যে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে তাদের প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘকে সম্পৃক্ত করবে।

কিন্তু কবে থেকে এই প্রত্যাবাসন শুরু হবে? এ নিয়ে কিছু জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী?

পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে করা হয়েছিলো যে ২৩শে জানুয়ারির মধ্যে শুরু হচ্ছে কি-না। কিন্তু তিনি তার সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ জানাতে পারেননি।

তবে বলেছেন যে যারা ফেরত যাবে তাদের ফেরত পাঠানো হবে পরিবার ভিত্তিতে। অর্থাৎ একটি পরিবার একটি ইউনিট হিসেবে বিবেচিত হবে।

তবে সেটি শুরুর আগে মিয়ানমার যে ফর্ম দিয়েছে রোহিঙ্গাদের তালিকাভুক্ত করতে সেটি সম্পন্ন করে তাদের কাছে পাঠানো হবে যাচাইয়ের জন্য।

আবার মিয়ানমারে ফিরে রোহিঙ্গারা কোথায় কিভাবে থাকবে - সেটা বাংলাদেশও দেখবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এমনকি এজন্য তিনি নিজেও রাখাইনে যেতে পারেন বলে বলেছেন।

একই সাথে তিনি মিয়ানমারকে উদ্ধৃত করে বলেছেন যে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের থাকার পরিবেশ উন্নয়নে সহায়তার জন্য চীন, জাপান ও ভারতের ভূমিকা চাইছে দেশটি যাতে করে রোহিঙ্গারা সেখানে ভালো পরিবেশে ও নিরাপদে থাকতে পারে।

বৈঠকের পর কয়েকজন কূটনীতিক কথা বলেছেন। তার মধ্যে রয়েছেন ভারতের ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। তিনি বলেছেন, রাখাইনের রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে সহায়তায় তারা কাজ শুরু করেছেন।

আর যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার বলছেন যে বার্তাটি তারা দিয়েছেন সেটি হলো প্রত্যাবাসন যেনো রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ ও স্বতঃস্ফূর্ত হয়।

অন্যদিকে মার্কিন রাষ্ট্রদূতও প্রায় একই কথা বলেছেন।

তার ভাষায় যে তিনি নিজে যাদের সাথে কথা বলেছেন তারা ফেরত যেতে চায়না। তাই প্রত্যাবাসন হতে হবে স্বতঃস্ফূর্ত, নিরাপদ ও স্থিতিশীল।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী প্রথমে কথা বলেছেন পশ্চিমা দেশ ও মুসলিম নয় এমন দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সাথে।

পরে তিনি দ্বিতীয় দফায় বৈঠক করেন মুসলিম দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সাথে।

কর্মকর্তারা বলছেন বাংলাদেশ নিজেও ওআইসির সদস্য। সে কারণে এসব দেশগুলোর নিরঙ্কুশ সমর্থন বাংলাদেশের বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখে। এজন্যই আলাদা ভাবে তাদের সাথে কথা বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

সর্বশেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারী ২০১৮, ০০:৫১
বিবিসি বাংলা

পাঠকের মন্তব্য

সর্বশেষ আপডেট


বিনোদন