কলকাতার ‘এপার-ওপার’ এর নায়িকা বাংলাদেশের সোহানা সাবা

সোহানা সাবা।
সোহানা সাবা।
‘ছিটমহল’ ইস্যু নিয়ে কলকাতার হরনাথ চক্রবর্তী তৈরী করছেন নতুন ছবি ‘এপার-ওপার’। এর নায়িকার ভূমিকায় রয়েছেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী সোহানা সাবা। কলকাতায় তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এবেলার শাঁওলি।

সোহানা সাবা বাংলাদেশের অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন অভিনেত্রী। প্রথম ছবি ২০০৬ সালে, ‘আয়না’। এই ছবিতে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছিলেন। এর পরে অনেকগুলি ছবি করেছেন, টেলিভিশন কমার্শিয়ালেও কাজ করেছেন। ফ্যাশন ডিজাইনিং নিয়ে পড়াশোনা করলেও অভিনয়কেই প্রিয় পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। হরনাথ চক্রবর্তীর নতুন ছবি ‘এপার-ওপার’-এ নায়িকার ভূমিকায় এখন তিনি অভিনয় করছেন সৌরভ চক্রবর্তীর বিপরীতে। তার সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন শাঁওলি।

প্রথমে বলো, কেমন লাগছে কাজ করতে?

সোহানা: ভীষণই ভাল লাগছে। কারণ, এটা আমার জন্য দ্বিতীয় ছবি কলকাতায়। এর আগে অয়ন চক্রবর্তীর ‘ষড়রিপু’-তে কাজ করেছি। আর দ্বিতীয় কারণটা অবশ্যই হরনাথ চক্রবর্তীর মতো পরিচালকের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা। তিনি শুধুই একজন বড়মাপের পরিচালক নন, একজন বড়মাপের মানুষও বটে। পুরো অভিজ্ঞতাটা আমার জন্য চমৎকার।

‘ছিটমহল’ ইস্যুটার বিষয়ে কি তুমি জানতে এর আগে?

সোহানা: ‘ছিটমহল’ বিষয়টা জানতাম, কিন্তু ওখানকার মানুষ যে এতটাই সুবিধাবর্জিত সেটা জানতাম না। তাঁদের যে এইভাবে দেখেও দেখার ভান করা হয়, সেটা ঠিক ধারণা ছিল না। ছবিটা শুরু করার আগে বিশদে জেনেছিলাম। তার পর ওখানে গিয়ে যখন কাজ করলাম, ওঁদের নিজের মুখ থেকে শুনলাম— সব মিলিয়ে অদ্ভুত একটা অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরছি। কারও টাকা না থাকতে পারে, কিন্তু আমি কখনওই ভাবতে পারি না যে আমি স্কুলে ভর্তি হব অথচ আমার বাবার নাম দিতে পারব না, আমার গ্রামের নাম দেওয়া যাবে না, মানুষের যে এরকম ক্রাইসিসও থাকতে পারে…! পরিচয়হীনতা এত দিন ধরে আর এটার পিছনে যে এত বড় একটা ইতিহাস— সেই বিষয়ে আমার এতটাও আইডিয়া ছিল না।

তোমার চরিত্রটা সম্পর্কে একটু বলো।

সোহানা: আমি বাংলাদেশের একটি মেয়েরই ক্যারেক্টার প্লে করছি। গল্পটা শুরু হয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের দশ বছর আগে থেকে। তার পরে আবার অনেকটা বছর পরের ঘটনা রয়েছে— আমার আর সৌরভের অনেকগুলো বয়সের অভিনয় করার সুযোগ রয়েছে।

তুমি তো বাংলাদেশে অনেকদিন কাজ করছ। কলকাতায় কাজ করার অভিজ্ঞতাটা কতটা আলাদা?

সোহানা: ‘ষড়রিপু’-তে কাজ করার সময় এই প্রশ্নটা অনেক বার শুনেছি। বেসিক ভাষাটা বাংলা, সেটা আমার সবচেয়ে সুবিধা এপারে কাজ করতে এসে এবং অনেকটাই সিমিলার কাজের ধরন, কিন্তু তাও বলব, একই রকম হয়েও কোথাও যেন একটু আলাদা। সেটা ঠিক কী, আলাদা করে বলাটা একটু মুশকিল।

কলকাতায় কি শুধুই কাজের সূত্রে আসা, নাকি বেড়াতে এসেছ আগে?

সোহানা: না কলকাতায় আমি আগে অনেকবার বেড়াতে এসেছি। আমার মায়ের দিকের অনেক আত্মীয়স্বজন রয়েছেন এখানে। আমি শপিং করতেও এসেছি অনেকবার। আর কলকাতায় ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে আমার একটা সিনেমা দেখেই আমাকে কাস্টিং করা হয়েছিল ‘ষড়রিপু’-তে। সেটা একটা গ্রেট এক্সপিরিয়েন্স আমার জন্য। গত বছর তো কতবার যে আমি যাওয়া-আসা করেছি ঢাকা-কলকাতা…, মনে হয় এয়ারপোর্টেই বেশি সময় কেটেছে আমার। কলকাতা আমার খুবই পছন্দের শহর। আর এটা তো এখন আমার কাছে ‘রথ দেখা, কলা বেচার’ মতো হয়ে গেছে। আমার পছন্দের শহরে পছন্দের মানুষের সঙ্গেও থাকা হচ্ছে আবার কাজও করা হচ্ছে।

সৌরভের সঙ্গে কাজ করে কেমন লাগছে?

সোহানা: ওর মধ্যে একটা ব্যাপার আছে যে ভাল করতে হবে, করে দেখাতে হবে। আর আমাদের আন্ডারস্ট্যান্ডিংটা খুব ভাল। আমরা পরস্পরকে সাজেশন দিই, ও আমাকে ধরিয়ে দেয়, আমি ওকে ধরিয়ে দিই, একসঙ্গে কাজ করতে করতে এই বোঝাপড়াটা গড়ে উঠেছে। আর এই আন্ডারস্ট্যান্ডিংটা স্ক্রিনেও এসেছে।

সর্বশেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৭, ০৯:৩৮
এবেলা

পাঠকের মন্তব্য

সর্বশেষ আপডেট


বিনোদন