পাঠ্যপুস্তকে জলবায়ু পরিবর্তনের তথ্য অর্ন্তভূক্ত করার দাবি

পাঠ্যপুস্তকে জলবায়ু পরিবর্তনের তথ্য অর্ন্তভূক্ত করার দাবি
পাঠ্যপুস্তকে জলবায়ু পরিবর্তনের তথ্য অর্ন্তভূক্ত করার দাবি

বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনে পৃথিবীর ক্ষতিগ্রস্ত দেশ গুলোর মধ্যে অন্যতম হলেও, পাঠ্যপুস্তকে জলবায়ু পরিবর্তনের তথ্য নেই বললেই চলে। তবে জলবায়ু বিপর্যয় ও বিপর্যয় রোধে করনীয় বিষয়টি পাঠ্যপুস্তকে অর্ন্তভূক্ত করলে খুব কম সময়ে অধিক মানুষকে সচেতন করা সম্ভব হবে। এতে জলবায়ু বিপর্যয়ের বিশাল হুমকি থেকে আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশকে কিছুটা হলেও রক্ষা করা সম্ভব হবে। রোববার (৯ জানুয়ারী) ধানমন্ডির আবাহনী খেলার মাঠের সামনে ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্লাইমেট নেটওয়ার্ক আয়োজিত মানববন্ধনে আলোচকেরা এসব কথা বলেন। এতে রাজধানীর ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল, রায়ের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।

মানববন্ধনে স্টামর্ফোড বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘জলবায়ু বিপর্যয়ের প্রভাব মোকাবিলায় এবং বিপর্যয় রোধে করনীয় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য কপ২৬ অনুষ্ঠিত হলেও কার্বন নিঃসরণ কমানোর ক্ষেত্রে বিশ্ব নেতারা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে এবারও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। পৃথিবীব্যাপী প্রাণ-প্রকৃতির অস্তিত্ব যখন বিনাশের পথে এখনও জি-২০ দেশের নেতারা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগছেন। যার কারণে বাংলাদেশের মত সমুদ্র উপকূলের দেশসমূহের জন্য এ বিপর্যয় ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।’

ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশের পলিসি অফিসার আ ন ম মাছুম বিল্লাহ ভূঞা বলেন, ‘জলবায়ু বিপর্যয়ের ফলে সারা বিশ্বের প্রাণ-প্রকৃতি আজ হুমকির মুখে। ব্যক্তিগত গাড়ি ও বিমানের ব্যবহার, কয়লা এবং তেল নির্ভর বিদুৎসহ আরো নানা কারণে আমাদের পৃথিবী প্রতিনিয়ত উত্তপ্ত হচ্ছে। বিশেষ করে, জি-২০ দেশগুলোর লাগামহীন কার্বন নিঃসরণ এবং মাত্রাতিরিক্ত জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার এই অবস্থার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী। তবে এই বিপর্যয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশের মতো প্রান্তিক দেশগুলো। যার কারণে বাংলাদেশের এক কোটি নব্বই লাখেরও বেশি শিশু সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। এসব শিশুর এক-চতুর্থাংশের বয়স পাঁচ বছরের কম। কাজেই আমাদের এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে।’ বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্লাইমেট নেটওয়ার্কের অফিসার শান্তনু বিশ্বাসের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন স্টপ এমিশনস নাও বাংলাদেশের সদস্য সচিব মঞ্জুর হাসান দিলু, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশের প্রজেক্ট ম্যানেজার বরনী দালবত, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল এর প্রধান শিক্ষক এম এ মান্নান মনির, রায়ের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. তাহাজ্জত হোসেন প্রমুখ।

আইপিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এই শতাব্দীর মধ্যে বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ এলাকা ডুবে যেতে পারে। দেশের ১৯টি জেলার প্রায় ৬০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা ডুবে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এ কারণে গৃহহীন হবে প্রায় দুই কোটি মানুষ। এছাড়াও বাংলাদেশের বরেন্দ্র অঞ্চল জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে মরুকরণে পরিণত হচ্ছে। এসবের ফলে দেশে খাদ্য উৎপাদন, সুপেয় পানির সংকট দেখা দিবে, বাড়ছে নিত্যনতুন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অসুখ-বিসুখ। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ঘরহারা মানুষের সংখ্যা। ফলাফল হিসেবে শহরাঞ্চলে বস্তিবাসীর সংখ্যাও বাড়ছে।

সর্বশেষ আপডেট: ৯ জানুয়ারী ২০২২, ২১:২০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মন্তব্য

সর্বশেষ আপডেট


বিনোদন