হাতীবান্ধার দুই নারী জয়িতার গল্প

লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার দুই নারী জয়িতা হলেন, আয়শা বেগম ও রেহেনা বেগম। আয়শা বেগম বাল্য বিবাহ, যৌন হয়রানী কিংবা ধর্ষনের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছেন আর রেহেনা বেগম বিয়ের পরেও লেখাপড়া চালিয়ে বিএ পাশ করেছে।

আয়শা বেগম উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের বাসিন্দা আশরাফুল আলমের স্ত্রী। আর রেহেনা বেগম টংভাঙ্গা গ্রামের মহসিন আলমের স্ত্রী।আয়শা বেগম একুশ শতককে জানান, ২০০০সালে আমি এসএসসি পরিক্ষা দেই। পরিক্ষার পর আমার বাবা-মা আমাকে বিয়ে দেই। আমি এ বিয়ে মেনে নিতে পারি না। তাই আমি শপথ গ্রহন করি যে আমার বাল্য বিয়ে হয়েছে। কিন্তু আমি আর কারো বাল্য বিয়ে হতে দিব না। তাই আমি বাল্য বিয়ে, ধর্ষনসহ নানা ধরনের সামাজিক ব্যাধি মূলক কাজের বিরুদ্ধে প্রতিবার করে আসছি। এতে আমার স্বামী ও আমাকে সাহায্য করে।

এ বিষয়ে সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূরল আমিন জানান,  আয়শা বেগম বাল্য বিয়ে, ধর্ষনসহ নানা ধরনের সামাজিক ব্যাধি মূলক কাজের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আসছে। কোথাও কোন অপরাধ মূলক কাজ হচ্ছে জানতে পারলে সে আমাকে জানায় আমি তা উপজেলা প্রসাশনকে অবগত করি।

রেহেনা বেগম জানান, পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে আমি বড়। বাবার অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় আমি ঠিকমত পড়াশুনা করতে না পরায় ১৯৯৫ সালে এসএসসি পরিক্ষায় ফেল করি। তাই ১৯৯৬ সালে আমাকে বিয়ে দেওয়া হয়। আমার স্বামী ছিল বেকার। তাই জীবিকার তাগিদে ১৯৯৭ সালে শাহ গরীবুল্লাহ এতিম খানায় রাধূনী হিসেবে চাকুরী নেই। তার মাসিক বেতন ছিল ৩০০ টাকা। এরপর মনে স্বপ্ন জেগে উঠে আমি আবারো পড়াশুনা করবো তাই এনজিওর কাছ থেকে ২০০০টাকা লোন নিয়ে ১৯৯৮ সালে উন্মুক্ত বিশ্ব বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। আর ২০০০সালে প্রথম বিভাগে পাশ করি। এভাবে পড়াশুনা করতে করতে ২০১৪ সালে বিএ পাশ করি। বর্তমানে আমি ব্রাকের একটি প্রোগ্রামে ট্রেইনার হিসেবে কর্মরত আছি। এখন আমি অনেক সুখি। শুধু চেষ্টা ও স্বপ্ন ছিল বলেই জীবনের সাথে যুদ্ধ করে রাধুনী থেকে আজ আমি ট্রেইনার হতে পরেছি।
এ বিষয়ে টংভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান আতি জানান, হ্যা অনেক কষ্ট করেছে রেহেনা বেগম। তাই হয়তো আজ সে ভালভাবে জীবন যাপন করছে।

সর্বশেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৭, ১১:৩৬
মাহমুদ হাসান
লালমনিরহাট প্রতিনিধি

পাঠকের মন্তব্য

সর্বশেষ আপডেট


বিনোদন