চীনে ঝুঁকছে আফ্রিকা

চীন ও তাইওয়ানের সম্পর্ক খুব জটিল। দুটি দেশেরই রাষ্ট্রীয় নাম চীন। বর্তমানে আমরা চীন বলতে যে দেশটিকে বুঝি, সেটির রাষ্ট্রীয় নাম ‘পিপলস রিপাবলিক অব চায়না’, আর তাইওয়ানের রাষ্ট্রীয় নাম ‘দ্য রিপাবলিক অব চায়না’।

১৯৭১ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে চীনকে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এক ভোটাভুটির আয়োজন করা হয়। ‘দ্য রিপাবলিক অব চায়না’ এবং ‘পিপলস রিপাবলিক অব চায়না’-উভয় সরকারই নিজেদের পুরো চীন ভূখণ্ডের (তাইওয়ানসহ) শাসক হিসেবে দাবি করছিল। আজ অনেকের কাছে শুনতে অবাক লাগতে পারে, ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তাইওয়ানের সরকারই (দ্য রিপাবলিক অব চায়না) জাতিসংঘে চীনের প্রতিনিধিত্ব করেছে।

এ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে পড়ুন: চীন-তাইওয়ান বিভক্তির প্রেক্ষাপট

১৯৭১ সালে জাতিসংঘে কে চীনের প্রতিনিধিত্ব করবে, সে প্রশ্নে ভোটাভুটির আয়োজন করা হয়। কারণ একই ভূখণ্ড থেকে দুটি সরকার জাতিসংঘে প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না। চীনের বৈধ সরকার কে, সেটি নির্ণয় করাও ছিল ওই ভোটাভুটির উদ্দেশ্য।

যুক্তরাষ্ট্র তখন ‘পিপলস রিপাবলিক অব চায়না’ সরকারের বিরোধিতা করে। কারণ দেশটি ‘দ্য রিপাবলিক অব চায়না’ (তাইওয়ান) সরকারের সঙ্গে বাণিজ্য ও সামরিক চুক্তি করেছিল।

সেই ভোটাভুটিতে পিপলস রিপাবলিক অব চায়না সরকার জিতলেও দ্য সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, চাদ, গেবন, লাইবেরিয়া, নাইজার, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ যে ৩৫টি দেশ চীনের বিরুদ্ধে এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ভোট দেয়, তাদের বেশির ভাগই ছিল আফ্রিকার।

২০০৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে উত্তর কোরিয়ার মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু চীন এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। বিশ্বের বাকি প্রায় সব দেশ এ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। কিন্তু এ ভোটের ফলে বিশ্বরাজনীতির নতুন এক চেহারা সবার সামনে উন্মোচিত হয়ে যায়।

আফ্রিকা মহাদেশ থেকে শুধু বুরুন্ডি, নিরক্ষীয় গিনি, ইরিত্রিয়া, ঘানা, কেনিয়া, লেসোথু, লাইবেরিয়া, মাদাগাস্কার, মালাউয়ি, মৌরিতানিয়া ও তানজানিয়া চীনের স্বার্থের বিরুদ্ধে ভোট দেয়। আর বাকি ৪৩টি দেশ হয় ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে, না হয় চীনের স্বার্থের পক্ষে ভোট দেয়। এতেই প্রমাণ হয়, গত ৪০ বছরে অনেক কিছু পরিবর্তন হয়ে গেছে। আফ্রিকার সঙ্গে চীনের হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক অনেক দূর এগিয়েছে।

আফ্রিকা এখন আর যুক্তরাষ্ট্রকে আগের মতো কুর্নিশ করে চলে না। এ মহাদেশের অধিকাংশ দেশ এখন হয় অর্থনৈতিকভাবে নতুবা রাজনৈতিকভাবে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ‘সুপার পাওয়ার’ চীনের সঙ্গে সম্পৃক্ত।

চীন কীভাবে পুরো আফ্রিকা মহাদেশে এত অল্প সময়ে এত বেশি প্রভাব বিস্তার করল? সহজ উত্তর হচ্ছে, চীন বিশ্বের সবচেয়ে গরিব ও অনুন্নত এ মহাদেশে বহু বছর ধরে অকৃপণভাবে ও অকাতরে টাকা ঢেলে চলেছে। আক্ষরিক অর্থে চীন আফ্রিকার দেশগুলোকে অনেকটাই কিনে নিয়েছে।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, চীন ৩২০ কোটি ডলার খরচ করে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবি থেকে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ও বন্দরনগরী মোমবাসার মধ্যে ৩০০ মাইল দীর্ঘ রেলপথ নির্মাণ করে। ফলে এই দুই শহরের মধ্যে এখন যোগাযোগ দূরত্ব কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র সাড়ে চার ঘণ্টায়। একই দূরত্ব পার হতে (ফিলাডেলফিয়া টু বোস্টন) যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে দ্রুতগামী ট্রেন এসেলা এক্সপ্রেসেরও এর চেয়ে বেশি সময় লাগে।

চীন ৫৪২ মিলিয়ন ডলার খরচ করে গিনিতে একটি বাঁধ নির্মাণ করেছে। এর ফলে অসহ্যকর বিদ্যুৎ সংকটে ভুগতে থাকা গিনি এখন নিজেদের চাহিদা পূরণ করে পার্শ্ববর্তী দেশেও বিদ্যুৎ রফতানি করতে পারছে।

ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় ৪৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার খরচ করে চীন এমন এক ধরনের হালকা রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করেছে, যার ফলে শহরের তীব্র যানজট অনেকটাই কমে গেছে। সাব-সাহারান আফ্রিকায় এটিই এ ধরনের প্রথম কোনো রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা।

এগুলো অসংখ্য উদাহরণের মধ্যে সামান্য কিছু। পুরোনো প্রকল্পগুলোর সঙ্গে প্রতি বছর আরও শত শত নতুন প্রকল্প যোগ হচ্ছে। মহাদেশজুড়ে চীন ছোট-বড় মিলিয়ে হাজার হাজার প্রকল্পে যুক্ত হয়েছে, যেগুলো আফ্রিকার অর্থনীতির চেহারাই বদলে দিচ্ছে।

এটা মনে রাখা দরকার যে, এসব প্রকল্পের প্রায় কোনোটিই বিনামূল্যে নয়। প্রতিটি প্রকল্পে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলোকে ঋণ দিচ্ছে চীনের রাষ্ট্রীয় ব্যাংক ‘দ্য এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক অব চায়না’। দেশগুলোকে অবশ্যই সেসব ঋণ যথাসময়ে ও সুদসমেত ফেরত দিতে হবে।

আফ্রিকার বড় বড় প্রকল্পগুলোতে সাধারণত কোনো ব্যাংক ঋণ দিতে চায় না। কারণ এসব ঋণ পরে ঠিকঠাকমতো ফেরত পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে থাকে তারা। কিন্তু চীনের রাষ্ট্রীয় ব্যাংক এসব ঝুঁকির কোনো তোয়াক্কা করছে না।

চীন সরকারের সমন্বয়ে ব্যাংকটি আফ্রিকার দেশগুলোকে অল্প সুদে ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিনা সুদে বড় বড় অঙ্কের ঋণ দিচ্ছে, যাতে তারা তাদের দেশের জন্য সমৃদ্ধশালী বড় বড় প্রকল্পগুলোর কাজ করতে পারে।

এ ঋণগুলোকে অাফ্রিকার প্রতি এক ধরনের সাহায্য হিসেবেও বিবেচনা করে চীন। সবগুলো ঋণ চীন যথাসময়ে ফেরত পাবে, এটা তারা নিজেরাও আশা করে না। এমনকি অনেক ঋণ আর কখনো ফেরতও পাওয়া যাবে না, এটাও দেশটি ভালো করেই জানে।

চীন আফ্রিকার প্রতি দয়াপরবশ হয়ে এত বিশাল অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করছে না। প্রতিটি ঋণের বিপরীতে দেশটির উচ্চ রাজনৈতিক খায়েশ আছে।

খুব দ্রুত বিকাশমান অর্থনীতির দেশ চীন। বছরের পর বছর ধরে দেশটির মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) দুই অঙ্কের ঘরে। চীন এখন ক্রমেই উন্নয়নশীল থেকে উন্নত রাষ্ট্রের দিকে ধাবিত হচ্ছে। অন্যদিকে আফ্রিকা এখনো বিশ্ব থেকে যোজন যোজন পিছিয়ে আছে। মহাদেশটির অধিকাংশ এলাকাই অনুন্নত, গরিব, পৃথিবী থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন। তাই এ অঞ্চলে দ্রুত উন্নয়নের অনেক সুযোগ আছে।

একটি দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ। প্রায় সব দেশেরই কোনো না কোনো প্রাকৃতিক সম্পদ আছে, যা ব্যবহার করে তারা তাদের অর্থনীতির গতি ত্বরান্বিত করতে পারে। কিন্তু সে জন্য দেশগুলোর সেই সম্পদ আহরণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি কেনার সামর্থ্য থাকতে হবে। সবাই জানে, টাকায় টাকা আনে। আর চীনের কাছে কাছে প্রচুর অর্থ।

আফ্রিকার খনি ও কৃষিতে চীনা বিনিয়োগের ফলে সেগুলো আগের চেয়ে বেশি সমৃদ্ধ হয়েছে। আফ্রিকায় উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্য চীন অল্প দামে নিজেদের দেশে আমদানি করতে পারে। এতে চীন আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে, ভবিষ্যতেও হবে।

প্রাকৃতিক সম্পদের বাইরেও আফ্রিকা ন্যূনতম মজুরির শ্রমিক সংখ্যার দিক থেকেও সমৃদ্ধ। সস্তা মজুরির শ্রমিকের দেশ হিসেবে একসময় চীনের পরিচিতি ছিল। সেই চীন এখন অন্যত্র অল্প মজুরির শ্রমিক খুঁজে বেড়াচ্ছে। বাস্তবতা এখন এটাই।

নিজেদের বেশি উন্নতির জন্য মাঝে মাঝে চীনকে ভুগতে হচ্ছে। অভাবনীয় অর্থনৈতিক উন্নতির কারণে দেশটির মানুষ এখন মধ্যম আয়ের জনগোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে। ফলে তারা এখন আর অল্প মজুরিতে কাজ করে না। চীন এখন কম দক্ষ শ্রমিকের দেশ থেকে মধ্যম মানের দক্ষ শ্রমিকের দেশে পরিণত হয়েছে, উচ্চশিক্ষার হার বেড়েছে। কিন্তু অল্প মজুরির শ্রমিক চীনে এখন আর পাওয়া যায় না।

এমন বাস্তবতায় চীনের কারখানাগুলো তাদের কার্যক্রম আফ্রিকায় স্থানান্তর করছে, যেখানে বিশ্বর সবচেয়ে সস্তা মজুরির শ্রমিক পাওয়া যায়। বর্তমানে একক দেশ হিসেবে পুরো আফ্রিকা মহাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার চীন।

আয়তনের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন প্রায় সমান। কিন্তু জনসংখ্যার দিক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বহু গুণ এগিয়ে আছে চীন। তারপরও দুটি দেশের বাৎসরিক রফতানি বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় সমান। ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও আফ্রিকা নিজেদের মধ্যে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আদান-প্রদান করেছে। একই সময়ে চীন ও আফ্রিকার মধ্যে ১২৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি-রফতানি হয়েছে। চীনের সঙ্গে আফ্রিকার বাণিজ্য যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে তিন গুণ বেশি।

অনুন্নত দেশগুলোতে এভাবে বিনিয়োগ করে ও তাদের সস্তা শ্রম ব্যবহার করে প্রভাব বিস্তার করার ধারণাটা কিন্তু নতুন নয়। ঔপনিবেশিক শাসকরা এই পন্থাই অবলম্বন করে। ১৫০০ শতক থেকে বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত ইউরোপীয় শক্তিগুলো অনুন্নত দেশগুলোতে এভাবেই আস্তানা গেঁড়ে বসেছিল।

চীন আফ্রিকাসহ বিশ্বের অনুন্নত ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে যেভাবে বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করে চলেছে, তাতে মনে হচ্ছে তারা সাবেক উপনিবেশ স্থাপনকারীদের দেখানো পথেই হাঁটছে। অনেক বিশ্লেষক বলেন, এসব বিনিয়োগের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও প্রভাব বিস্তার করার পরিকল্পনা আছে চীনের।

গবেষণায় দেখা যায়, আফ্রিকার কোনো দেশ যদি তাইওয়ানকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তাহলে প্রতি বছর তাদের ভাগে পার্শ্ববর্তী অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় ২.৭টি চীনা প্রকল্প কমে যায়। আর যদি কোনো আফ্রিকান দেশ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে চীনের স্বার্থের পক্ষে ভোট দেয়, তাহলে তাদের দেশে চীনা প্রকল্প বেড়ে যায় ১.৮টি।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রতিটি দেশের একটি করে ভোট। সেটি যত বড় দেশই হোক আর যত ছোট দেশই হোক প্রতিটি ভোটের মূল্য সমান। চীন তাই জাতিসংঘে আফ্রিকার দেশগুলো থেকে বরাবরই সুবিধা পায়।

চীন তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ বলে মনে করে। কিন্তু তাইওয়ান নিজেদের স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে দাবি করে।

চীনের বিদেশি বিনিয়োগে ‘যদি, কিন্তু’র মারপ্যাঁচ আছে। যদিও এমন অভিযোগ চীন বরাবরই অস্বীকার করেছে। চীন বলছে, বিশ্বব্যাংক বা আইএমএফের মতো তারাও অনুন্নত দেশগুলোকে স্বল্প সুদে ঋণ দেয়। কিন্তু চীন উল্লিখিত সংস্থাগুলোর মতো দেশগুলোকে মানবাধিকার বা গণতন্ত্র সুরক্ষার অঙ্গীকারের শর্ত দেয় না। যদি রাজনৈতিক সুবিধার কথা বলা হয়, তাহলে এসব বিনিয়োগে ঋণগ্রহণকারী দেশগুলোর চেয়ে চীনই বেশি লাভবান হচ্ছে।

আফ্রিকায় চীনের এমন একক আধিপত্যে পশ্চিমা দেশগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করছে। ২০১৭ সালে চীন আফ্রিকার দেশ জিবুতির কৌশলগত স্থানে একটি সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করে। এর আগে দেশটিতে ফ্রান্স, ইতালি, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি ছিল।

ভিনদেশে এটাই চীনের প্রথম সামরিক ঘাঁটি। বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত ও শক্তিশালী সামরিক বাহিনীসম্পন্ন মাত্র ১৫টি দেশের ভিনদেশে এমন সামরিক ঘাঁটি আছে। চীন এখন এই এলিট দেশের তালিকায় ঢুকে পড়ল।

আফ্রিকা মহাদেশজুড়ে বিশাল বিশাল সব বিনিয়োগ করে যাচ্ছে চীন। কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলো আফ্রিকায় চীনের প্রভাবকে যে চোখে দেখে, চীন সেটিকে কখনো স্বীকার করে না।

দুটি তথ্যের দিকে নজর দেওয়া যাক। ২০১৫ সালে চীন আফ্রিকার দেশগুলোকে এক হাজার ২০০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে। একই বছর চীন মহাদেশটিতে ৩০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। মনে হচ্ছে, চীনা বিনিয়োগ কমে এসেছে? না, চীনের এখন আর রাষ্ট্রীয়ভাবে আফ্রিকায় সেভাবে বিনিয়োগ করতে হচ্ছে না। কারণ চীনা কোম্পানিগুলো আফ্রিকা মহাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে এবং তাদের প্রভাব দিন দিন বেড়েই চলছে।

১০ হাজারেরও বেশি চীনা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এখন আফ্রিকায় ব্যবসা করছে, যাদের মধ্যে ৯০ ভাগেরও বেশি বেসরকারি। চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো আফ্রিকা থেকে দুই হাতে টাকা কামাচ্ছে।

আফ্রিকার শিল্প খাতের উত্থানে চীন ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু সেটি এখন শেষের পথে। এখন আফ্রিকার অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার সময়। এ কাজে বড় ভূমিকা রাখছে চীনের ক্ষুদ্র ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো।

অধিকাংশ পশ্চিমা দেশ আফ্রিকা মহাদেশের সীমাহীন সম্ভাবনাকে উপক্ষো করেছিল। চীন এ সুযোগটি লুফে নিয়েছে। চীনা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো গোটা আফ্রিকায় জালের মতো ছড়িয়ে পড়ছে।

চীনের অর্থনৈতিক উত্থানের সময় সেখানে ব্যবসা করাটা যতটা লাভজনক ছিল, এখন আফ্রিকায় ব্যবসা করাটাও সমপরিমাণ লাভজনক। বর্তমানে চীনের জন্য সস্তা শ্রম ও সম্পদ রফতানিকারী হিসেবে আফ্রিকা একটা স্থিতিশীল অবস্থায় এসেছে।

পশ্চিমা দেশগুলোর নজর পড়ার আগেই আফ্রিকা আরও বেশি চীনের দিকে ঝুঁকে পড়বে। সেখানে চীনের প্রভাব-প্রতিপত্তিও আরও বাড়বে। আফ্রিকা হয়ে উঠবে চীনের চীন।

চীন যখন এত কিছু করছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তখন নিত্যনতুন ‘উন্মাদনায়’ ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সূত্র: ওয়েন্ডওভার প্রোডাকশন, সিএনএন

সর্বশেষ আপডেট: ১১ আগস্ট ২০১৮, ১৮:৫৯
অনলাইন ডেস্ক

পাঠকের মন্তব্য

সর্বশেষ আপডেট


বিনোদন