গুহায় নিখোঁজ খুদে ফুটবলাররা জীবিত, উদ্ধারে কয়েক মাস লাগবে

থাইল্যান্ডে গুহায় নিখোঁজ খুদে ফুটবলারদের সন্ধান পাওয়া গেছে। নিখোঁজ হওয়ার নয় দিন পরও খাদ্যহীন অবস্থায় তারা গুহার ভেতরেই জীবিত রয়েছে। তবে তাদেরকে রাতারাতি উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদেরকে উদ্ধার করতে কয়েক মাস লেগে যেতে পারে।

নিখোঁজ ১৩ জনের ওই খুদে ফুটবল দলে ১২ জন খেলোয়াড় ও একজন কোচ রয়েছে। ওই ফুটবলারদের বয়স ১১ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। আর কোচের বয়স ২৫ বছর।

সোমবার রাতে তাদেরকে খুঁজে পায় ব্রিটেনের দুইজন ডুবুরি দল। তাদের জীবিত সন্ধান পাওয়ার খবরে থাইল্যান্ড জুড়ে বইছে আনন্দের বন্যা। তাদের পরিবারের সদস্য ও দেশবাসী খুশিতে আপ্লুত হয়ে পড়েন।

ওই খুদে ফুটবলারদের পানির নিচে একটি পর্বতের মধ্যে একটি গুহায় পাওয়া গেছে। থাইল্যান্ডের মিয়ানমার সীমান্তবর্তী চিয়াং রাইয়ের থাম লুয়াং নামের ওই গুহায় নিখোঁজ হওয়ার পর তাদেরকে খুঁজতে ম্যারাথন অনুসন্ধান অপারেশন পরিচালিত হয়, যাতে প্রায় ১৫০০ থাই সেনা, নৌ ও ফায়ার সার্ভিস সদস্য অংশ নেন। পাশাপাশি কিছু ব্রিটিশ ডুবুরিও তাদের সঙ্গে অনুসন্ধান কার্যক্রমে যোগ দেন।

তবে সন্ধান পাওয়ার পর তাদেরকে এখন সেখান থেকে জীবিত উদ্ধার করে আনাই বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ তাদেরকে উদ্ধারের পথ কাঁদা ও জোয়ারের পানিতে দুর্গম হয়ে গেছে।
উদ্ধারকারীরা ধারণা করেছিলেন, ওই খুদে ফুটবলারদের পাতায়া সমুদ্র সৈকতের নিচে একটি গুহায় হয়তো খুঁজে পাবেন। তবে তাদের ধারণার বাইরে গিয়ে সেখান থেকে প্রায় ৪০০ মিটার দূরে একটি গুহায় খুঁজে পান। গুহার মধ্যে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদেরকে উঁচু স্থানে সরে যেতে হয়।

থাইল্যান্ড সেনাবাহিনী জানিয়েছে, খুদে ফুটবলারদের উদ্ধার করতে হলে তাদেরকে ডুবসাঁতার শিখতে হবে অথবা বন্যার পানি কমার জন্য কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে।

তারা জানান, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বর্তমানে ওই কিশোরদের জন্য খাবার ও চিকিৎসা সহায়তা নেওয়া হচ্ছে।

সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ওই কিশোরদের এমন পরিমাণ খাবার সরবরাহ করা হবে যেন তা দিয়ে কমপক্ষে চার মাস চলা যায়।

ওই কিশোরদের উদ্ধার অভিযান থাইল্যান্ডে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। কারণ অনেকেই সংশয়ে ছিলেন, কিশোরগুলো জীবিত আছে নাকি মারা গেছে।
উল্লেখ্য, থাম লুয়াং গুহা উত্তর থাইল্যান্ডের একটি দুর্গম স্থান হিসেবে পরিচিত। বর্ষাকালে গুহার ভেতরে বন্যা হয়, যা সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।

এর আগে ওই কিশোরদেরকে উদ্ধার করতে হলে তাদেরকে ডুবসাঁতার শিখতে হবে। কারণ গুহার নিচে উদ্ধারে পথে অনেক জায়গা পুরোপুরি কর্দমাক্ত, কোথাও ১৬ ফুট পর্যন্ত পানি, কোথাও পুরোটাই পানিতে পূর্ণ, যেখানে কিছুই দেখা যায় না। এ ছাড়াও অনেক স্থান খুবই বিপজ্জনক।

এদিকে, খুদে ফুটবলারদের উদ্ধারে গুহার পানি কৃত্রিমভাবে সরানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন উদ্ধারকারীরা।

উল্লেখ্য, ২৩ জুন দুপুরে ওই ফুটবল দলটি ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ ওই গুহায় প্রবেশ করে। তবে সন্ধ্যায়ও ফিরে না আসলে তাদের খোঁজে অভিযান শুরু হয়।

তথ্য : বিবিসি

সর্বশেষ আপডেট: ৩ জুলাই ২০১৮, ০৯:৩৫
অনলাইন ডেস্ক

পাঠকের মন্তব্য

সর্বশেষ আপডেট


বিনোদন