স্বপ্নের ক্যাম্পাস আনন্দ মোহন কলেজ

‘জ্ঞানকে শক্তিতে রূপান্তরের রাজ্যে স্বাগতম’ কিংবা ‘জ্ঞানের জন্য আসো, সেবার জন্য যাও’। মূল ফটক থেকে শুরু করে এমন বাণী চোখে পড়বে ময়মনসিংহের গর্ব আনন্দ মোহন কলেজের বিভিন্ন প্রবেশপথে। এছাড়াও মূল ভবনের ফটকে লাগানো হয়েছে ডিজিটাল ডিসপ্লে । যেখানে ভেসে আসছে প্রতিদিনের কার্যক্রম ।

আধুনিকতার ছুঁয়ায় নতুনত্ব যোগ হয়েছে কলেজ ক্যাম্পাস টিতে ।স্বপ্নের এ ক্যাম্পাসটিকে সবুজ করে সাজাতে কাজ করছে ১ম বর্ষের কয়েক জন ক্যাম্পাস প্রেমী তরুণ । ‘সবুজ পৃথিবী, সবুজ ক্যাম্পাস’ । এ যেন অন্য রকম এক ভালবাসা । তাদের এ ক্ষুদ্র প্রয়াস যেন ক্যাম্পাসটিকে সবুজের সমারোহ করে তুলে । সবুজ ক্যাম্পাস গড়তে কাজ করছে, নিলয়,রতন,সম্পা,আজহার,নুসরাত,রেজওয়ানা কেয়া সহ আরো অনেকেই ।ওদের এই স্বপ্ন আনন্দ মোহন কলেজ ক্যাম্পাস একদিন সবুজে সমারোহ হয়ে উঠবে এবং এতেই ওদের এ ক্ষুদ্র প্রয়াস স্বার্থক হবে ।

আনন্দ মোহনকলেজের রয়েছে বিভিন্ন ইতিহাস আর ঐতিহ্য। ১৮৮৩ সালে উপমহাদেশের সমাজ সংস্কারক আনন্দ মোহন বসু প্রতিষ্ঠিত ‘ময়মনসিংহ ইনস্টিটিউশন’টি নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ১৯০৮ সালে যাত্রা শুরু করে আজকের আনন্দ মোহন কলেজ নামে। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৬৩ সালে সরকারীকরণ করা হয়।

‘আমাদের কলেজে বর্তমানে উচ্চমাধ্যমিক কোর্সসহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ১৮টি বিষয় পড়ানো হয়।’ বলেন চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান জনি। আর আটপৌরে স্বপ্নের কথা যখন কারও কোন পাবলিক ভার্সিটিতে চান্স হবে না বা সে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারেনি এরকম কাউকে প্রশ্ন করা হলে যে কোথায় ভর্তি হবে???সে হয়তবা একদমে উত্তর দিবে আনন্দ মোহন কলেজ । দুই বৎসর আগে ভর্তি প্রক্রিয়াটা পাবলিক ভার্সিটির মতই । কিন্তু এখন একজন ছাত্রের এইচএসসি’তে পড়াশোনা করে ভাল রেজাল্টের মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় টিকে ভর্তি হতে হয় ।

আমাদের কলেজের সুনাম শুধু বৃহত্তর ময়মনসিংহ নয়, গোটা বাংলাদেশেই রয়েছে। শিক্ষার্থী হিসেবে যা আমাকে গর্বিত করে।’আরও জানা যায়, এই কলেজের ছাত্র ছিলেন প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ, লেখক সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ, নীহাররঞ্জন রায়, জাদুকর পিসি সরকার, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এম মোফাখখারুল ইসলাম, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মো. আনোয়ারুল ইসলাম, বিশ্বভারতীর শিক্ষক অরবিন্দ পোদ্দার, লেখক যতীন সরকার, কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য শামসুর রহমান, বিচারপতি এম এ রশিদ, কবি নির্মলেন্দু গুণ প্রমুখ।

‘অধিকাংশ শিক্ষার্থী কোনো না কোনো সহশিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত। বিএনসিসি, রোভার স্কাউটসহ খেলাধুলা, সাহিত্য-সংস্কৃতিচর্চা, বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সাফল্য আছে আমাদের কলেজের।’ বলতে থাকেন কলেজের স্নাতকপড়ুয়া দেলোয়ার হোসেন। শুধু সহশিক্ষা কার্যক্রম নয়, ফলাফলেও ধরে রেখেছে সাফল্যের ধারাবাহিকতা।

কলেজের অধ্যক্ষ:প্রফেসর জাকির হোসেন বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় নিয়মিত ফল করছে। বর্তমানে প্রায় ৩২ হাজার শিক্ষার্থীর কলেজটিতে শিক্ষক রয়েছেন ২০১ জন। রয়েছে পাঁচটি আবাসিক হল। প্রায় ৫০ হাজার বই নিয়ে সমৃদ্ধ কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি। ইন্টারনেট ক্যাফে চালু করা হয়েছে। ঐতিহ্য আর আধুনিকতার মিশেলে কলেজটিকে করে তুলেছে অনন্য।’

সর্বশেষ আপডেট: ১৮ আগস্ট ২০১৭, ০০:২৬
এস.এম আবু সাঈদ
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

পাঠকের মন্তব্য

সর্বশেষ আপডেট


বিনোদন